শনিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০০৯

জীবনের গল্প

আমার ভালো লাগছেনা। আমার এই বিশাল বাড়ির কি করব। আমি বিশাল বাড়ির একটি ঘরের জানালা দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছি।

এমন সময় রেহান এসে বল্ল- "মামা তুমি এখানে, আমি সারা ঘর তোমাকে খুজছি। মামা আমি এই সেমিস্টারেও দারুন রেজাল্ট করেছি।"
"আমি জানি বাবা তুই পারবি ।" -আমি বলি।
"এখন তাহলে তোমার কথা মোতাবেক আমাকে কি দেয়ার কথা ছিল।"
"একটু সবুর কর আমি তো দিবই। আগে বস। ঠান্ডা হো। বল রেহানার কি খবব। তোর কি খবর।"
"মা সে কি কখনো খারাপ থাকে। সে তো সব সময় ভালো থাকে। আর আমি এখন কেমন আছি তাতো তুমি বুঝছই।"
"আরে না পাগল তুই বুঝবিনা তোর মায়ের ব্যথা। সে সব সময় ভাল থাকার চেষ্টা করে।"
"ওসব আমার বোঝার দরকার নেই । তুমিই বুঝো। তুমি আমাকে টাকা দাও। আর তিনদিন পর ভার্সিটি খুলবে। আমি আজ বন্ধুদের সাথে ছবি দেখতে যাব সিটিটে এবং সেখান থেকে মোবাইলটা কিনে ফেলব।"


দু:খিত আমার উপস্থিতির জন্য। আমি রেহান। এখানে কেন্দ্র আমি না আমার মামা- মুহাইমেনুন খান। মামি আমার জন্মের আগেই মারা গেছে। মামা, মামিকে অনেক ভালোবাসত। তাই মামা আর বিয়ে করেনি। মামার বাসায় এসে দেখি মামা কি জানি লিখছে। আমি বায়না ধরলাম এই রচনায় মামার অভিষেকটা আমি দিব। বাংলাদেশের ধনী মানুষের মধ্যে অন্যতম আমার মামা। আর আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষও। আমি আমার মামার মত এমন মানুষ পৃথিবীতে দ্বিতিয়টি দেখিনি। মামা আমার প্রিয় তার প্রধান কারণ আমার বাবা মারা যাবার পর আমাদের সব কিছু উনিই দেখেছেন। আমি একটা জিনিস বুঝিনা ভাই বোনের একি রোগ কেন। আপনারা বুঝছেন, আমি কি বলতে চাচ্ছি। মামা আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমি জানি কিছুদিন পর মামার পুরো সম্পদ আমার হবে। সেদিনই মামা আমাকে এমনই আচ দিল। কিন্তু জানিনা কি হবে। আমি কি পারব মামার মত এমন হতে। আমি কি পারব মামার মত এই সম্পদটাকে কাজে লাগাতে। মামার সম্পর্কে আর কি লিখব বুঝে পাচ্ছিনা। যা হোক মূল ঘটনায় চলে যাই। ঘটনাটি দুই বছর আগের। তখন আমি ছাত্র ছিলাম। এখন আমি একটা ভালোই চাকরি করছি।
আমার সাথে সবসময় মামার চুক্তি থাকত। আমি পরিক্ষায় ভালো করলে আমি যা চাব তাই মামা আমাকে দিবে। সে সময় এন৯৫ দিবার কথা ছিল। মামা আমার কাছে ষাট হাজার টাকা দিয়েছিল। প্রথমে পঞ্চাশ দিয়েছিল পরে আমি আরো দশ বেশি নিলাম। কারন মামার মত দানশীল হতে হবে তো তাই তখন থেকেই অভ্যাসটি করছিলাম। দশ হাজার টাকা আমি দান করে দেই। আমার আর একটা দায়িত্ব ছিল আমার বন্ধুরা কে কোথায় কেমন ছিল সেটা মামাকে জানাতে হবে। বন্ধুদের আর্থিক সমস্যা হলে মামা সাহায্য করত। তবে দেয়ার আগে অনেক যাচাই করত। যেন কোন ভুল কাজে তার টাকা না নষ্ট হয়। মামা আমার এক বন্ধুর অপেরশনের জন্য ত্রিশ লক্ষ টাকা দিয়েছে। তার ব্রেন ক্যান্সার ছিল। অস্ট্রলিয়ায় –পাঠাতে হয়েছিল। আর মামা এই কাজটা এমন কৌশলে করেছে যে আমার বন্ধু আসিফ বা তার পরিবার তো বুঝতেই পারিনি কে তাদের এত বড় উপকার করল। মামা জানাতে পছন্দ করে না। এ ধরনের আরো অনেক সমস্যা আমাকে মামার জানাতে হত। আপনারা আরও শুনে অবাক হবেন আমার মামার ঢাকা শহরে আজব কয়েকটা আন্ডারগ্রাউন্ড সংসস্থা আছে। যেখানে ঢাকা শহরের ফকির গুলো ধরে নিয়ে তাদের সামার্থ অনুযায়ী কাজ দেয়া হয়। যে যেমনই কাজ পারে তাকে তেমন কাজ দেয়। কারো পড়াশোনার ইচ্ছা থাকলে পড়ায়। যে কিছু পারে না তাদের এতিম খানায় বিশেষ সেবা করা হয়। ঢাকা শহরের অনেক এটিমখানার মালিক মামা। মামা নিজের নাম প্রচার করবেননা বলে তাদের মালিক অন্য কেওকে করে দেয়। মামা তার বিশ্বস্ত মানুষকে এতিম খানার মালিক বানায়।

এখন আসল কথা বলি। মামার রচনায় প্রথমে আমি কেন। সেইদিন মামাকে আরও একটা তথ্য দেই আমি। যেদিন এন৯৫ কিনি। তথ্যটা এমন ছিল আমার ক্লাসে পড়ত এক মেয়ে অনিলা মাদকাসক্ত ....

থাক হয়েছে বুচ্ছি অনেক লিখেছিস। অনিলা নামের একটি মেয়ে মাদক নেয়া শুরু করেছে। তার কারণ সে অমিত নামের এক হিন্দু ছেলেকে সে ভালোবাসেছিল। ফোনে বন্ধুত্ব। অমিত তাকে সবসময় বন্ধুই মনে করেছে কিন্তু অনিলা ভুল বুঝেছিল। ছয় মাস পর অমিত তাকে তার ভুল ভাঙায়। সত্যিতা জানার পর অনিলা অসুস্থ হয়ে যায়। এই বেদনা সইতে না পেরে মাদককে সে বেছে নেয়। বনশ্রী কোন এলাকা থেকে নাকি সে মাদক নিত। চুরি বিদ্যাও সহজে আয়ত্ত করে ফেলেছে। বাসা থেকে অনেক টাকা চুরি করত। বাসার অনেকেই জানতনা। রাতের পর রাত বান্ধবীর বাসায় থাকে এই বলে কত রাত যেয়ে বাসায় ফিরে নাই তার ঠিক নাই। তার এক বাজে কাজিন তার সাহায্য করেছে এই ব্যপারে। খুব ভালো হত আনিলা যদি এগুলো বলত। রেহান আমাকে এভাবে বলেছে। রেহান তখনই ওকে কিছুটা পছন্দ করত। ওর কোন খারাপ কিছু ওর ভালোলাগত না।

এই কথা শোনার পর আমি ভেবেছিলাম ওনেক কিছুই তো করলাম। কখনো তো এদের কথা ভাবিনি। যারা মাদকে আসক্ত হয়। আমি ভাবলাম আমি নিজেই এদের জন্য। পরক্ষভাবেতো কিছু কিরনাই এবার কিছু একটা করব। কিন্তু মাথায় আসছেনা কি করব। কোথায় থেকে শুরু করব। একবার মনে হল রেহানের মাধ্যমে অনিলার সাথে কথা বলি। কমপক্ষে ওকে সুস্থ্ করার আগে চেষ্টা করি।

সেদিন রাত্রেই বনশ্রীর একটি গার্মেন্টসে মিটিঙ্গ ছিল। মিটিঙ্গ শেষ করতে রাত বেশি হয়েছিল। রাত প্রায় এগারটা হবে মনে হয়। যে রাস্তা দিয়ে ফিরছি সেখানে কোন আলো নেই।এতটাই নির্জন এলাকা ছিল যে গাড়ির আলোয় পথ চিনছি। ড্রাইভার আমাকে বল্ল সামনে কয়েকজন রাস্তায় শুয়ে রাস্তা আটকিয়ে রেখেছে। আমি ড্রাইভারকে পাশ কেটে চলে যেতে বলি। আমি হেডলাইটের আলোয় দেখতে পাচ্ছি একজন উঠে দাড়ালো। কি ভেবে আমি গাড়ি থামাতে বল্লাম। ড্রাইভার থামাতে চাচ্ছিল না। সে ভয়ার্ত গলায় বলছিল, "না থামানোটা ঠিক হবে।" আমি আবার বলায় থামায়। আমি গাড়ি থেকে বের হই। দেখি রাস্তায় যে তিনজন শুয়ে ছিল তারাও উঠছে। মোট চারজন। আমার সামনে এসে দাড়াল। মদ খেয়ে মাতাল। তারা কাছে আসতেই বাজে গন্ধ টের পাই। আমি কারো চেহারা ভালো করে দেখতে পাচ্ছিনা। আমার মুখে টর্স মেরেছে। আমি বল্লাম, "কে তোমরা, কি চাও।"
কেও একজন বলছে, "কে মানে। এখনোও বুঝতে পারছেন না আমরা কে। ঠিক আছে এত বোঝা লাগবে না আপনার কাছে যা আছে তা দিয়ে দেন।" পাশের থেকে অন্য আরেকজন বলছে, "বোকা নাকি এভাবে গাড়ি থামিয়েছে। যাকগে আমাদের বেশি কষ্ট করেত হচ্ছেনা।" আমি বলি,
"আমি একটা কারণে গাড়ি থামিয়েছি। আমার কাছে তো এখন এতটাকা নেই আমি এখন মাত্র পাঁচহাজার দিতে পারব।” আরে তাই দেন- একজন বল্ল। আমি বলি,
"শোন তোমরা কি করতে পার। আমার তোমাদের মত কিছু নতুন মানুষ প্রয়োজন। আমি আরো টাকা দিব।" বুঝতে পারলাম তৃতীয় আরেকজন বলছে,
"কথা কম যা বলছি তাই কর। আমাদের আর লাগবে না। বেশি ফকফক করলে চাক্কু ঠিক গলায় বসিয়ে দিব। গুলি খরচ করুমনা।"
আমি একটু ঘাবড়িয়ে যাই তারপরেও বলি, "দেখ এর চেয়েও ভাল বন্দুক ও আমি দেব। টাকাও দিব। আর তোমাদের কাজটি কঠিন হবেনা। শুধু মাত্র ভয় দেখাতে হবে। আমার অপসিট পার্টির ব্যবসায়ীদের আর আমার তিনটা দশতালার বাড়ি আছে সেখানে ভয় দেখাতে হবে। কি হবে মাত্র পাচহাজারে, আমার সাথে চল। আমার কাজে রাজি না হলেও তোমরা প্রতিজনে বিশ হাজার টাকা নিয়ে ফিরে যাবে। এখন এটা তোমাদের চিন্তা তোমরা কি করবে।"
আমি দেখলাম তারা নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বাধিয়ে দিয়েছে। কেও রাজি কেও রাজি না। আমি আবার বলি,
”দেখ তোমরা কিন্তু ভেবনা যে আমার আর মানুষ নেই। অনেক সাঙ্গপাঙ্গ আমার আছে। আমি নতুন আরো কয়েকজন চাই। ব্যবসা বৃদ্ধির সাথে সাথে আমি নতুন সাঙ্গপাঙ্গও যোগ করি। আর আমার কথায় রাজি থাকলে প্রতি মাসে তোমরা পঞ্চাশ হাজার টাকা পাবে। এমন কি আমি তোমদের বাসাও দিব। বুঝে দেখ আমার ব্যবসার ভাব কেমন হলে আমি তোমদের এমন একটা অফার দেই। তোমরা তো কিছুই না। আমার কাছে এমন মানুষও আছে যার কাছে খুন মামুলি ব্যপার।"
তাদের মধ্যে কিহল, কিছু বুঝলামনা। তারা ফিসফিস করে কথা বলছে। এরপর একজন বল্ল,
"আচ্ছা আমরা কাল আপনার ওখানে আসব। আপনি এখন পাচই দেন।"
"বুচ্ছি তোমরা এতেই খুশি থাক তোমাদের আর লাগবেনা। এত ভিতু হলে দেখা যাবে বাসার ভাড়ায়টিয়ারা তোমাদের উল্টো ভয় দেখাচ্ছে।" -আমি বলি।
কে জানি বলে উঠল "চলেন।"
আমার গাড়িতে পিছনে চারজন উঠল। গাড়ির মধ্যে বসে আমার বাসার দারওয়ান কিউন কে বলি কিছু বিদেশী আর দেশি মদ কিনে রাখতে। রাত বেশি হয়েছিল, কেমন করে মদ পেল বুঝলামনা। গাড়ির মধ্যে একজন বলে, "বস এমন একটা গাড়ি কি সবার জন্য হবে।" আমি বলি, "আস্তে আস্তে সবই হবে, আগে দেখি, তোমরা কাজটি কেমন করতে পার।"

বাসায় ফিরে তাদের থাকার জন্য আমার গেস্ট হাউসের দুটো ঘর দিলাম। আর দুই ঘরে বিদেশী একটা, দেশি দুইটা মদের বোতল দিলাম। আর প্রতিজনের হাতে বাইশ হাজার টাকা দিলাম।

আমি ভোরে ঘুম থেকে উঠি। দেখি সবাই ঘুমিয়ে আছে। সকালে অফিসে চলে গেলাম। আমি বিকেল চারটার আগে ঘরে ফিরতে পারিনা কিন্তু সেদিন বারটায় ফিরলাম। আমি মনে করেছিলাম ওরা মনে হয় চলে যাবে। ঘরে যেয়ে দেখি মাত্র ঘুম থেকে উঠেছে। উঠেই মদ চাচ্ছে। কানর, আমার ঘরের চাকর এসে বলে- "এখন কি করি।" আমি নিজেই ওদের কাছে গেলাম।
"কি খবর আমার দেশের সোনার ছেলেরা।"
একজন বলে- "মাল কই।"
"কত লাগবে।"
" সকালে প্রতিজেনর দুইটা বাংলা দিলেই হবে, ওই বিদেশীতে আমাদের হয় না।"
"সেটা তো এখন ঘরে নেই ঘরে নাস্তা আছে তা আজ একটু কষ্ট করে খাও। তোমাদের চাহিদার ব্যবস্থা করছি।"
"মাল ছাড়া আমার গলা দিয়ে কিছুই তো নামবেনা।"-একজন বল্ল।
"চেষ্টা কর। একটা দিন মাত্র । তোমাদের চাহিদাটা জানিয়ে দিও। সেভাবেই আনা হবে। "
”এই তুই ফকফক বেশি করছ। যা বলছি তাই কর যেখান থেকে পারিস বাংলা নিয়ে আয়।” -অন্য আরেকজন বল্ল।
ওদের মধ্যে একজন বল্ল, "ঠিক আছে আমরা নাস্তাই করছি।" তারা কিজানি আলোচনা করছে বুঝতে পারছিনা।”
আমি তার নাম জিজ্ঞেস করলাম যে নাসতা খাওয়ার জন্য সবাইকে মানাল।


আমার নাম জামাল। সেদিন রাত্রে আমি বাকি তিনজনের কমান্ড করছিলাম। আমরা চারজন ভালো বন্ধু ছিলাম। সবাই আমাকে বেশি মানত। আমাদের চারজনের দু:খ ছিল চাররকম। দু:খ আমাদের বন্ধুত্বের উতস। এই দু:খ কমানোর জন্যই আমরা মাদককে আমাদের সাথি করে নিয়েছিলাম। আমি বাকি তিনজনের সাথে পরামর্শ করে, রাজি করিয়ে এখানে এসেছিলাম। আমার টাকাপয়সার কোন দরকার নেই। আমার এই মানুষটাকে মারা দরকার ছিল। আমি ছোট থাকতেই আমার বাবাকে হারাই। এর পর আমার বড় ভাই আমাদের সংসারের হাল ধরেছিল। আমার বড়ভাই সত ছিল, সবার উপকার করে বেড়াত বলে এমনই বড়লোকের পালা কুত্তাদের গুলিতে মরে গিয়েছিল। আমার বড় ভাই শিক্ষক ছিল। আমার বড় ভাই , গার্মেন্টস মালিকের ছেলে রকির একটা অপরিস্থিতিকর ঘটনা দেখে ফেলেছিল। মেয়ে ঘটিত ব্যপার ছিল। মেয়েটি গরিব ছিল বলে তার পক্ষে বলার কেও নেই। আমার ভাই প্রতিবাদ করতে চাইলে রকির বাবা আমার ভাইকে মেরে ফেলে তার সাঙ্গপাঙ্গ দ্বারা। আমি এমন মানুষকে মেরে ফেলতে চাই যারা আমাদের মত যুবকের হাতে বন্দুক তুলে দেয়। এই ক্ষভেই আমি এখানে এসেছিলাম। ওর বন্দুক নিয়ে ওকেই প্রথমে মারব । আমার যা হবে হোক। আমি ছাড়া আমার ঘরে মা আর বোন আছে। আমি বেচে থেকেই বা কি উপকার করছি এর চেয়ে মরাও ভালো। কিন্তু আমি অবাক হয়ে গেলাম লোকটিকে দেখে। আমি ভাবতেও পারিনি লোকটি এমন ধরনের হবে। তৌশিক না থাকলেতো আমি এই মানুষকে চিনতেই পারতামনা। আমরা চারজনই খাবার টেবিলে এসে নাসতা খেতে বসি, আমাদের সাথে স্যারও বসেন। তবে উনি আমাদের সাথে খান না।

আমি তৌশিক। আমি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। আমার বাবা সরকারি নিম্নপর্যায়ের কর্মকর্তা। আমার ছোটবোনের হৃদরোগ ছিল। আমার বাবার সামার্থ ছিলনা চিকিতসা করানোর। আমি আমার ছোট বোনকে অনেক ভালোবাসি। আমি চোখের সামনে ছোট বনকে এভাবে দেখতে পারবনা তাই রাজনীতির সাথে জড়িয়ে গিয়েছিলাম। একজনের পাল্লায় পড়ে মদ, গাজা আর বন্দুক চালানো, সেখান থেকেই শিখেছি। কিন্তু কেওকে মারিনি। সেখানে গিয়ে পড়ে থাকতাম ফ্রি মদ, হেরোইন আর গাজা পেতাম তাই। আমার মনে বিশাল ব্যথা ছিল। এই ব্যথা দমানোর জন্য আমি সেবন করতাম এই মরণপানীয়। আমি এমনটি হতে চাইনি। আমাকে সময় বাধ্য করেছে এমনটি হতে। আমি ভালো হতে চেয়েছিলাম। আর্থিক অভাব আর সংসারের বিভিন্ন সমস্যা আমাকে ব্যথিত করে তুলেছে। সেদিন আমার মনে একটা কথা বলার ইচ্ছা ছিল, নাসতা খাবার সময় ভাবছিলাম লোকটাকে বলব কিনা।
সাহস করে বলেই ফেল্লাম, "আমার লাখ বিশেক টাকা লাগবে। আপনি আমাকে এখন দেন আমি সারা জীবন আপনার এখানে গোলামি করব।"
লোকটিকে আমার পারিবারিক পরিস্থিতি সম্পর্কে বল্লাম। লোকটি আমাকে যা বল্ল তা শুনে আমি থ খেয়ে গেলাম। সে আমাকে বলে, "তুমি কি মনে কর তোমার বাবা তোমার থেকে টাকা নিবে। কোন সত বাবা এমনকি আমিও আমার মাদকাসক্ত ছেলের কাছ থেকে টাকা নিবনা। তুমি যদি তোমার বাবাকে রাজি করাতে পার, তোমার টাকা যদি সে গ্রহণ করে আমি দিতে রাজি আছি।"
আমিও ভাবলাম বিষয়টা, বাবা আমার কাছ থেকে টাকা নিতে চাইবে না। আমি লোকটাকে বলি, "আমি এখন কি করি আমারতো আর কোন পথ দেখছি না।"
তখন তিনিই আমাকে বলেন, "এখনোও সময় আছে তুমি সঠিক পথে চল। তোমার বাবাকে আমি বুঝাচ্ছি। কাল থেকে আমি তোমার বোনের চিকিতসার ব্যবস্থা আমি করছি।"
আমি পরিবর্তন হয়ে গেলাম। আমাকে একটা মাদক নিরাময় কেন্দ্রে ভর্তি করিয়ে দেয় আমি আমার নিজের ইচ্ছায় সুস্থ হয়েছি। কারণ আমি সবসময় ভালো থাকতে চেয়েছিলাম। আজ স্যারের কম্পানিতে চাকরি করছি। আমি এখন ভালো আছি।

আমি এদুজনের সমস্যাটা বুঝেছি কিন্তু আলিন্দ আর নতুন এরটা ধরতে খুব কষ্ট হয়েছিল। নতুনকে অলিন্দই, এসবের দিকে ঝুকতে প্রভাবিত করে । নতুনের মনের ব্যথাটা ছিল আরও বেদনাদায়ক। ঢাকা মেডিকেলের ছাত্র ছিল নতুন। অনেক লাজুক ছেলে ছিল । ওর মত একটা ছেলে এতটা পরিবর্তন হয়ে যাবে তা আমি ভাবিনি। তার সাথেই পড়ত রূপা। নতুন, রূপাকে মনে মনে ভালবাসত । কিন্তু কখনো তাকে বলিনি। রূপার বোন ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার্থি। রূপা গরীব ছিল। তাই রূপা তার বোনের রেজিস্ট্রেসনের টাকা উপার্জনের জন্য অনৈতিক একটা কাজ করে। যা সমাজের দৃষ্টিতে মনুষত্বের চরিত্রকে বিনষ্ট করা। নতুন সচেক্ষ তা দেখেছে। নতুন পড়াশোনা ছেড়ে দেয়। সে মানসিক রোগী হয়ে যায়। তার দু:খ, মানুষ কেমন করে এত নিচে যেতে পারে। উপার্জনের আরো মাধ্যম আছে। এই পথটাই কেন বেছে নিল। এই পৃথিবীতে বেচে থাকার স্বপ্ন আর সে দেখতে চায়না। এই পৃথিবী তার কাছে জাহান্নাম হয়ে গিয়েছিল। এই পৃথিবীর কিছুই তার ভাল লাগেনা। সে মরে যেতে চায়। এবং সে জেনে শুনেই মাদককে আপন করে নেয়। মাদক হল তার মরণ ফাদ।
আমি খবর নিলাম রূপার। আসলে ব্যপারটা জানার চেষ্টা করলাম এবং যা জানলাম তা হল, এতই গরীব ছিল রূপারা যে তার মা, তার বোন নিপুনের রেজিস্ট্রেশন খরচ যোগাড় করতে করতে পারিনি। মা কেন্দ্রিক পরিবার ছিল রূপার। বাবা নাকি মাতাল হয়ে পড়ে থাকত বাসায়। তাদের পরিবারটি ভালো ছিলনা। পরিবারের প্রতিটি সদস্যদের মধ্যে কিছু না কিছু দোষ ছিল। অশিক্ষিত পরিবার ছিল। তার মধ্যে অমন একটি মেয়ে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে এটাই অনেক। আমি রূপা আর নিপুনের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকার চেক দিয়ে আসি রূপার হাতে, আরো লাগলে আরো দেব। "আমার কিছুই লাগবেনা সুদ হিসেবে, একজন ভালো মানুষ লাগবে। আমরা এ পৃথিবীতে এসেছি। কোন না কোন কারণে। আমাদেরকে বের করতে হবে আমরা কি কারণে এসেছি। এবং সে মোতাবেক চলার চেষ্টা করতে হবে। পূর্বে কি করেছি তা আর মনে করবনা। আসলে আর্থিক সমস্যা মানুষকে এতটা নিচে নামতে বাধ্য করে আমি ব্যপারটা আগে খেয়াল করিনি। তুমি আর এরপরে আর নিজের মূল্যবোধ ক্ষুণ্য করনা। পড়াশোনার দিকে মন দাত্ত। আর নিপুণের দিকে খেয়াল রাখ নিপুণের যেন তোমার মত রাসতা না বেছে নিতে হয় সেদিকে খেয়াল রাখ।" রূপাকে এভাবে বুঝিয়ে আসি।
এরপর দায়িত্বতা ছিল নতুনকে বুঝানোর। নতুনের জানা ছিল না রূপার পারিবারিক অবস্থা সম্পর্কে। আমি তাকে তা জানালাম। তাকে বুঝালাম,
"অনেক সময় নিজের অজান্তে, ইচ্ছা বিরুদ্ধেও আমরা অনেক কাজ করে ফেলি। তারতো সমস্যা ছিল তাই নাই সে এমন করল। তোমার বাবা মা কি দোষ করেছে। তাদের কেন শাস্তি দিচ্ছ। তুমি যতনা কষ্টে আছ তারচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় তারা আছে। তারা যে কেমন আছে তা তুমি কখনোই বুঝবে না। তুমি বুঝবে না যখন তোমার বাবার অনুপস্থিতে একজন আরেকজনকে বলে অমক সাহেবের ছেলেটা নষ্ট হয়ে গেছে। আর কাকতালিয়ভাবে তোমার বাবা তা শুনে ফেলেছে। তখন তিনি মনে কি ব্যথা পায়, তুমি কিভাবে তা অনুভব করবে। তোমার মনের এই ব্যথার মূল্য সেতুলনায় অতিসামান্য। পৃথিবী এমনই, এসব মেনে নিয়ে নিজেকে সাবধান রেখে এখনে চলতে হয়। কেন কেও বলতে পারবে যে নতুন নষ্ট হয়ে গেছে। পৃথিবী অনেক কঠিন। তুমি তো কিছুই দেখনি এরচেয়ে ভয়ানক আমি দেখেছি। এখন বলতে চাইনা। একবার ভেবে দেখ, তুমি শুধু নিজেকে না আরো কতজনকে কষ্ট দিচ্ছ। তুমি যদি শুধু নিজেকে কষ্ট দিতে পার সেখানে অন্য কেত্ত তোমান জন্য ভুগবে না, তাহলে আমি তোমাকে বাধা দিবনা।"
আমি যখন বলি তখন রাত ছিল। তাকে সকাল পর্যন্ত সময় দেই ভাবার।

উপরের জনেদের বুঝলাম নায় আর্থিক সমস্যা। কিন্তু অলিন্দ, অলিন্দ কেন বা কিভাবে মাদকাসক্ত হল। শুনে খুব দু:খ পেলাম। অলিন্দ তার বাবা মার একমাত্র ছেলে। অনেক বড়লোকের ছেলে। যা চায় তাই পায়। কিন্তু প্রপার ভালোবাসাটা পায়না। ছোটবেলা থেকেই আয়ার কাছে মানুষ হয়েছে। বাবা ব্যবসার কাজে ব্যস্ত, আর মা রেডিওতে খবর পড়ত। বাবা মা তেমন কেয়ার নিতনা। অলিন্দর দরকার ছিল ভালবাসার। তার আপন মাও তার কাছে সত লাগত। সবসময় নিজের কাজে ব্যস্ত থাকত তার মা। ছেলেকে কাছে ডেকে গল্প শোনানো বা মাথায় হাত বুলিয়ে দাওয়া, তা শেষ কবে করেছে মনে নাই অলিন্দের। বাবা মা প্রতি ঘন্টায় ছেলের খবর নিত ফোন করে। এইটুকুই তারা করত। মাঝে মাঝে ফোন করাটাও ভুলে যেত। যা অলিন্দের কাছে ফরমালিটিস মনে হত। আয়াই তার মা ছিল। কিন্তু আয়া কার আক্সিডেন্টে মারা যাবার পর সে ক্রমে ক্রমে মাদকাসক্তে পরিনত হয়। একলা হয়ে যায়। বাবা তার কাছে চেক বই দিয়ে দিছে। তার আকাউন্টে প্রতিমাসে পনেরো হাজার টাকা চলে আসে।
কিন্তু আমি অবাক হই। একটা মা এমন কেমন করে হয়। একটা মানুষ তো আর চব্বিশ ঘন্টা কাজ করে না। অলিন্দ আমার কাছে আরেকটা খবর লুকিয়ে রেখেছিল। তার বাবা মার লাভ ম্যারেজ ছিল। তারা বাসায় থাকলে বেশিরভাগ সময়ই ঝগড়া করত। অলিন্দ এই ব্যপারটাকে খুব ভয় পেত। আর এই ঝগড়ার খারাপ প্রভাব পড়েছে অলিন্দর উপর। অলিন্দকে আমি এখন কিভাবে বুঝাই। আবার আরো একটা সমস্যা ওর মার কারণে পুরো মেয়ে জাতিকে ঘৃণা করত। কি করব বুঝে পাচ্ছিলাম না তখনই রেহান আমাকে বল্ল অনিলা, অলিন্দর খালাত বোন। অনিলাকে ওই সাপ্লাই করে এসব মরণপাত্র।
আমি অলিন্দকে বুঝাই, "তুমি নিজে নস্ট হচ্ছ ঠিক আছে, তুমি অনিলার জীবন কেন নষ্ট করছ। অলিন্দ বলে
আমি ওকে শেষ করে দিতে চাই।" আমি বলি,
"কেন? তোমার মম এমন বলে সব মম ই যেয়ে এমন হয় কে বলছে। আমার মা ভালো ছিল। রেহানের মা কত ভালো। তারপর এখন যেহেতু আমি জানি, আমি তো অনিলাকে শেষ হতে দিব না। আচ্ছা তুমি চাওটা কি। তুমি কয়জনকে শেষ করতে পারবে।"
অলিন্দ বলে, "ওদের সবার রক্ত এক, ওর জন্য অনেকজনকে ভুগতে হবে। আমার মম এর সিস্টারের মেয়ে। ওর ক্ষেত্রেও তাই হবে যা আমার মম এর ক্ষেত্রে হয়েছে।"
আমি খবর নিয়ে দেখলাম অনিলার পরিবারেও কিছুটা অলিন্দের পরিবারের মতই সমস্যা। আমি আর কি করি আমার কিছুই করার নেই । রেহান এসে আমাকে বল্ল,
"মামা ও আমার বাসায় যাক। আসলে ওর প্রয়োজন মায়ের ভালোবাসা।"
সত্যি রেহানা পেরেছিল। অলিন্দ সুস্থ হতে থাকল। ওকে একদিন রেহান সাধারণ কিছু মানুষের জীবনযাত্রা দেখিয়ে এনেছে। তাকে বুঝিয়েছে মানুষ কত ভালো থাকে। তাকেও থাকতে হবে। কত মানুষ না খেয়ে মরছে। কত মানুষ চিকিতসার অভাবে মরছে। আর তুমি কত টাকা পয়সা নষ্ট করে ফেলছ।
অলিন্দ শেষে ঠিক করে ও ওর বাসায় কখনোই ফিরবে না এখন থেকে ওর মা রেহানাই। অলিন্দর বাসা থেকে তার বাবা মা আসে। প্রচুর কান্দে আমার কাছে। আমি কি করব। তাদের জন্যই তাদের ছেলে তাদের কাছ থেকে দূরে। তারা অলিন্দের পা ধরল। অলিন্দ অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমি লক্ষ্য করলাম। অলিন্দ তাদের ক্ষমা করে দেয়। সে বলে আমি বেশিরভাগ সময়ই এখানে থাকব। অলিন্দ তার বাবা মাকে বলে, তোমরা আমার ড্যাড মম আর আমার মা হল এখানে।
এখন অলিন্দ তার বাবার ব্যবসা দেখছে। অসহায় মানুষের সেবা করে যতটুকু পারে।

ও আচ্ছা জামালের কথাই তো লিখতে ভুলের গেলাম যে নাকি আমাকে মারতে চেয়েছিল। সে আমার আচরণ দেখে নিজেকে ঘৃণা করতে লাগল। আমি তাকে বুঝাই, তোমার দোষ নেই আমাদের মত কিছু মানুষ প্রভাব খাটিয়ে এমন কাজ করে, তোমার ভাবাটা স্বাভাবিক। জামাল এখন আমার কম্পানিতে চাকরি করছে ভালই আছে আশা করি।

আমার কথা হচ্ছে অর্থ মানুষকে প্রচুর কষ্ট দেয়। অর্থের জন্য মানুষ অতি জঘন্য কাজ করে ফেলে। তার মূল্যবোধকে ক্ষুন্ন করে। সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা মানুষকে অসত কাজে ব্যবহার করে। আর মানুষ অভাবের তাড়নায় সেই খারাপ কাজে লিপ্ত হয়। শুধু অর্থ না মানুষের ভালবাসাটাও আজ কমে গেছে। সবাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। মানুষের মধ্যে মায়া মহব্বতের অভাব পড়েছে। ধনী মানুষ অর্থের জোরে নিজের মত দুনিয়াটাকে সাজাচ্ছে । আর কিছু শ্রেনীর মানুষের কিছুই করতে না পেরে অসহায়ত্বের দ্বারে মাথা ঠুকছে।
আমরা যা পাই তাতেই আমাদের খুশি থাকতে হবে। হতাশা জীবনে দুর্ভোগ নামিয়ে আনে। আল্লাহ তায়ালা মানুষকে বলেছে সবুর কর। যারা ধনী, তারা ধনী কেন। কারণ তাদের সমাজের প্রতি প্রচুর দায়িত্ব আছে। কিন্তু তারা তা ভুলে যায়। তারা আরো অর্থ কামানোর নেশায় মত্ত থাকে। মোবাইল আপডেটের সাথে সাথে হাতে সেই মোবাইল থাকা। প্রতি বছর নতুন নতুন গাড়ি বাড়ি কিনার জন্য এই অর্থ ধনী মানুষের হাতে আসে না। আসে এই অর্থের সুষম বন্টনের জন্য। তারা হল মাধ্যম। এই কথাগুলো তাদের মাথায় যায়না। এজন্যই তারা নিজেরা কখনো শান্তিতে থাকতে পারেনা।
ভালবাসা আর অর্থ এমন দুটি পবিত্র রূপক যা নিজে ভোগ করাতে না, বিলিয়ে দেয়াতে আনন্দ। আমার জন্য একটা মানুষ হাসবে এটাই তো অনেক। এর চেয়ে আর সুখ এই পৃথিবীতে আছে? আমার আর কি চাই। সবাই যদি এমন হত তাহলে আমরা আমাদের পৃথিবীটাকে আরো সুন্দর করে তুলতে পারতাম। আমরা আমাদের কাজগুলো ভাগ করে নিব। আমি একলা কতটুকু পারব। সবাইকে হাত বাড়িয়ে দিতে হবে। আমার, আমাদের, দেশের কল্যাণে কাজ করে যাব, যেতে হবে। আমরা এই কাজগুলোকে, এভাবে ব্যবহার করবনা- যে কারো উপকার করছি। এটা আমাদের দায়িত্ব। যে, যতটুকু পারি করি, করার চেষ্টা করি। আমার আর কিছুই বলার নেই ।

আমি এই চারজন মানুষকে জীবনের অর্থ বুঝাতে পেরেছি এতেই আমার শান্তি। আসেল আমি না ত্তরা নিজেরাই নিজেদের পরিবর্তন করেত পেরেছে। মানুষ নিজের থেকে ভালো না হতে চাইলে কেও তাদের ভালো করতে পারবেনা। আমরা শুধু মাধ্যম- আমি, রেহান আর রেহানা। আমি এগুলো লিখেছি আমার সুনাম খ্যাতির জন্য না আমি লিখেছি কারণ আমার এই কথা পড়ে আরও কেও যেন তাদের হাত বাড়িয়ে দেয়। আমি আর কিছুই বলতে চাইনা।

আমি রেহান আরেকটু যোগ করতে চাচ্ছি। মামার মত বানী আমি দিতে পারবনা। আমি একটু অন্যরকম। তবে মামার মত হতে চাই । মামা মহত অধিকারের মানুষ। অনিলা, যাকে আমি ভালবাসি। সে এখন সুস্থ এবং এখন আমার অর্ধেক। বুঝছেনতো। অলিন্দ, অমিত, আমার ভালোবাসা অনিলাকে মাদক থেকে দূরে সরাতে সক্ষম করেছে। অমিত একজন অনেক ভালোমানুষ। অমিত অনিলাকে বুঝায়,
"দেখ আমি আমার ধর্ম ত্যাগ করতে পারব না। আমি চাই না তুমি তোমার ধর্ম ত্যগ কর।"
আমি অমিতের পরের কথা শুনে তো হতভাগ হই। অমিত অনিলাকে বুঝায়,
"দেখ আমরা মানুষ আমাদের সবপাওয়া যে পূরণ হবে তা তো ঠিকনা। সব পূরন হলে তো তাহলে আমরা মানুষ হলামনা। তখন তো হয়ে যাব রূপকথার চরিত্র। বাস্তবে তা সম্ভবনা। আমাদের বেচে থাকতে হবে আমাদের জন্য, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। মুসলমান ধর্মে আছে বিধর্মি মানুষের হাতে কিছু খাওয়াও পাপ। আর তুমি আমাকে ভালবাসার চিন্তা করছ। তুমি এমনটি কর না। আমরা ভাল বন্ধু ছিলাম এবং থাকব। রেহান তোমাকে অনেক ভালবাসে ও জানে তুমি তিলে তিলে শেষ হয়ে যাচ্ছ, তুমি মাদক সেবন কর তারপরও ও তোমাকে গ্রহণ করতে চাচ্ছে তোমাকে ভালো করতে চাচ্ছে। আমি কখনও করতাম না এমন। প্লিজ তুমি ভালো হয়ে যাও কমপক্ষে রেহানকে আর কষ্ট দিওনা।"
অলিন্দ তাকে বুঝালো,
"আমি ভুল করেছিলাম আমি চাচ্ছিলাম তুমি খারাপ হয়ে যাও আমার জন্য আজ তোমার এই অবস্থা প্লিজ তুমি আগের মত হয়ে যাও। দেখ আমি এখন আগের চেয়ে কত ভাল আছি। আমকে ঘৃণা কর আমার কিছু আসে যায় না। তবে নিজেকে শেষ করে দিও না।
অনিলা তার ভুল বুঝে। আমি আজও অনিলাকে ভালবাসি। অনিলা অনেক ভালো মেয়ে।

আমি অলিন্দ কিছু বলতে চাই। আমরা মানুষ। আমাদের অনেক চাওয়া পাওয়া আছে। সব চাওয়া পাওয়া আমাদের পূরণ হবেনা। এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে মাদক কোন সলুইউসান না। আমরা কেন মাদক নিব। পৃথিবীতে কত মানুষ না খেয়ে অছে। কত মানুষ থাকার জন্য আশ্রয় পাচ্ছে না। আমরা একবারও তাদের কথা ভাবিনা। আমরা স্বার্থপরের মত কাজ করি। আমরা আমাদের নিয়ে ভাবি। মাদক আমাদের তিলে তিলে শেষ করে দেয়। আমরা মাদককে না বলব। স্বাভাবিক থাকব। অস্বাভাবিক কিছুই আমরা চিন্তা করব না। তাহলেই আমরা ভালো থাকব। আমরা শুধু আমাদের যা কর্তব্য তাই করে যাব। মানুষের পাশে সবসময় থাকব। আমার এবং মানুষের কথা ভাবব। এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটি মানুষ একে অপরের আপনজন। আমি এটাই মনে করি। এবং সবার সুখে আমি হাসব, সবার দু:খে আমি কাদব। তার বেদনাকে আমার বেদনা মনে করব। তার উপায় বের করব। এটাই হওয়া উচিত পৃথিবীর নিয়ম। আমরা যারা ভুল পথে চলি তাদের নির্দেশনা দেয়ার জন্য শুধু ভাল বন্ধু চাই মহান আংকেলের মতন, রেহানের মতন। শেষে আরেকবার বলি মাদক কোন সমাধাননা। খামাকা এর পিছনে টাকা খরচ করে অর্থ আর নিজেকে শেষ করিনা।

এটা শ্রেফ একটা গল্প। প্রত্যেকটি চরিত্র সাজানো। এইসব চরিত্রের কোন ভিত্তি নেই। গল্পটা লিখেছি সমাজের মানুষের শিক্ষা দেয়ার জন্য। মানুষের কর্তব্য কি, তা ধরিয়ে দেয়ার জন্য। জানিনা কেমন হয়েছে। সামান্য চেষ্টা করলাম মাত্র।

সন্ধান করতে