২. আরিফের জীবনের ওলটপালট
এখন আরিফ তিনটা টিউসুনি করে। নাটাশা তাকে ফ্লেক্সি পাঠাত, আরিফের কাছে ভাল লাগেনা। নাটাশার সাথ কথা বলে জানতে পারল, নাটাশা অনেক বড় লোকের মেয়ে। নাটাশার মা নেই। ওর যত্ন করার জন্য অনেক মানুষ আছে। এক খালা লন্ডন থাকে। নাটাশা তাকে পছন্দ করে কিন্তু পড়শোনার জন্য খালাকে লন্ডন যেতে হয়। বাবা তেমন সময় দিতে পারে না। আরিফের সাথে কথা বলতে তার ভাল লাগে। আরিফকে ছাড়া কিচ্ছু বুঝেনা। মাদক কেন্দ্রময় থেকে সুস্থ্ হয়ে ফিরে এসেছে। নাফিসা যখন যা চায় তাই পায়। নিজের ইচ্ছা মত চলে।
নটরডেমের পড়াশোনার চাপ। প্রাইভেট পড়তে যাওয়া, প্রাইভেট পড়ানোর পর হোস্সেলে ফিরতে ফিরতে ১১টা বেজে যায়। তারপর আবার রাত জেগে নাটাশার সাথে কথা বলা আর একসাখে পড়াশোনা করা, ২-৩ঘন্টা ঘুমানো। এই ছিল আরিফের পতিদিনের পুঞ্জিকা ছিল।
প্রথম ঈদ। নাটাশার কথা ভুলেই গেছে। এবার তার নূপুরের কথা মনে পড়ল। নূপুরের জন্যই তারাতারি বাড়ি ফিরা। নাটাশার সাথে কথা বলবেনা, আর বাসায় এর জন্য সমস্যা হবে তাই সেলেফান বন্ধ রাখে। বাড়ী ফিরে মার সেকি কন্না,-আমার নাদুস নুদুস ছেলের একি অবস্থা।
বাড়ী ফিরে নূপুরের জন্য অপেক্ষা করল। আরিফ মনে করেছিল, ওর আসার কথা শুনে নূপুর ঠিকই দেখা করতে আসবে। কিন্তু না আসায় আরিফ তার মাকে ওর ব্যপারে জিজ্ঞেস করলে কোন উত্তর পায় না। পাড়ার মানুষ থেকে জানতে পারল, নূপুরের বাবা বিয়ে ঠিক করেছিল। নূপুর বিয়ে করবেনা তাই বাসা থেকে পালিয়েছিল। ধরা পড়ার পরে তার বাবা তাকে ছোট বোনের বাড়ি টাঙ্গাইল পাঠিয়ে দিয়েছে সেখানই সে এখন থাকে, পড়াশোনা করে। বাবা মেয়ের মুখ দেখবে না নূপুরের মা গেছে টাঙ্গাইলে। এই কথা শুনে আরিফের মন খারাপ হয়ে গেছে। তার ঈদ আধা হয়ে গেছে।
ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরে দেখে মোবাইল হাঙ হয়ে আছে। নাটাশার অসংখ্য এস.এম.এস আর মিসকল মোবাইলের এই অবস্থা। কোন মেসেজ.. মিস কল সংখ্যা দেখতে পারেনাই। দোকানে যেয়ে মোবাইল ঠিক করালো। তারপর রাতে নাটাশাকে ফোন দেয়ার পর জানতে পারল, নাটাশা এই কয়দিনে কোন ওষুধ খায়নি বরং ড্রাগ নিয়েছে। কানতে কানতে এই সব কথা নাতাশা বলে। আরিফ সরি বলে আর নাটাশা যাই চাবে তাই করবে এমন কথা দেয়। নাটাশা পরের দিন দেখা করতে চায়। সারাদিন ওর সাথে সময় কাটাবে। আরিফ দেখা করতে চাচ্ছিলনা- কথনই না। কিন্তু নিজের অনিচ্ছায় তাকে দেখা করতে হল।
চলবে......